শুক্রবার, ২২ নভেম্বর ২০২৪, ০১:০০ পূর্বাহ্ন
চাঁপাইনবাবগঞ্জের ৪৬টি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে দীর্ঘদিন ধরে প্রধান শিক্ষক নেই। এসব বিদ্যালয়ে সহকারী শিক্ষকরা প্রধান শিক্ষকের দায়িত্ব পালন করছেন। এ কারণে এসব শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের প্রশাসনিক কার্যক্রম ও পাঠদান ব্যাহত হচ্ছে।
জেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তার কার্যালয় সূত্রে জানা যায়, জেলায় মোট ৭০৫টি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় রয়েছে। এরমধ্যে ৪৬টি প্রধান শিক্ষকের পদ শূন্য। এসব বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষকরা প্রধান শিক্ষকের দায়িত্ব পালন করেন। আরও নয়টি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে প্রধান শিক্ষকের পদ নিয়ে জটিলতা রয়েছে। এছাড়া জেলায় ৩১৯টি সহকারী শিক্ষকের পদও শূন্য রয়েছে।
সূত্রটি আরও জানায়, মামলাজনিত কারণে চাঁপাইনবাবগঞ্জ সদর উপজেলায় ১০০, শিবগঞ্জ উপজেলায় ১৩৩, গোমস্তাপুর উপজেলায় ৩৪, নাচোল উপজেলায় ৩৬, ভোলাহাট উপজেলায় ১৬ সহকারী শিক্ষকের পদশূন্য রয়েছে।
জেলা শিক্ষা কর্মকর্তা বলছেন, দীর্ঘদিন জেলার বেশকিছু সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে প্রধান ও সহকারী শিক্ষকের পদ শূন্য থাকায় ওই শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোতে একদিকে যেমন প্রশাসনিক কাজে সমস্যা হচ্ছে অন্যদিকে শিশু শিক্ষার্থীদের পড়াশোনাও বিঘ্নিত হচ্ছে। বিশেষ করে চরাঞ্চলের প্রাথমিক বিদ্যালয়গুলোয় এ সংকট আরও বেশি।
জানা যায়, সদর উপজেলার শাজাহানপুর ইউনিয়নের চর কাঁচিচর প্রাথমিক বিদ্যালয়ে ছাত্র-ছাত্রীর সংখ্যা ৬৬২টি। এ বিদ্যালয়ে অনুমোদিত সহকারী শিক্ষকের পদ ১০টি। কিন্তু এখানে কর্মরত রয়েছেন মাত্র তিনজন। সাত শিক্ষকের পদ শূন্য রয়েছে এ বিদ্যালয়ে। একই অবস্থা জহুরপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে। অনুমোদিত আটজনের জায়গায় কর্মরত রয়েছেন মাত্র তিনজন। চরআলাতুলি কোদালকাটি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে নয়জনের জায়াগায় কর্মরত আছেন চারজন। এছাড়াও চরআলাতুলি কোদালকাটি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, নামোসূর্যনারায়ণপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, চরবাগডাঙ্গা-২ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, শেখালিপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়সহ বিভিন্ন বিদ্যালয়ে রয়েছে শিক্ষক সংকট। চাঁপাইনবাবগঞ্জ সদর উপজেলার চরআলাতুলি, চরবাগডাঙ্গা, শাহজাহানপুর ও নারায়ণপুর ইউনিয়নের অধিকাংশ প্রাথমিক বিদ্যালয়ে শিক্ষক সংকটে খুঁড়িয়ে খুঁড়িয়ে চলছে শিক্ষা কার্যক্রম। অন্যদিকে শিবগঞ্জ উপজেলার পাঁকা ইউনিয়নের চরাঞ্চলগুলোতে অবস্থিত বিদ্যালয়গুলোর অবস্থাও একই।
চাঁপাইনবাবগঞ্জ সদর উপজেলার শাহজাহানপুর ইউনিয়নের চর কাঁচিচর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক রফিকুল ইসলাম বলেন, ৬৯২ জন শিক্ষার্থীর বিপরীতে রয়েছেন মাত্র তিনজন শিক্ষক। এ সংকটের মধ্য দিয়ে বিদ্যালয় সামাল দেওয়া খুব কঠিন হচ্ছে। কিন্তু আমার বিদ্যালয়ে দশজন সহকারী শিক্ষকের পদ রয়েছে।
জেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা সাইফুল ইসলাম বলেন, দীর্ঘদিন ধরে উপজেলার ৪৬টি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে প্রধান শিক্ষকের পদ শূন্য থাকায় ওই শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোয় একদিকে প্রশাসনিক কাজে সমস্যা হচ্ছে অন্যদিকে, শিশু শিক্ষার্থীদের পড়াশোনা বিঘ্নিত হচ্ছে। এ বিষয়ে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে নিয়মিত বলা হচ্ছে।